Neymar: বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকাদের মধ্যে নেইমার ডা সিলভা সান্তোস জুনিয়র অন্যতম। তার ফুটবল দক্ষতা এবং অপ্রতিরোধ্য প্রতিভা তাকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে এনে দিয়েছে। কিন্তু ফুটবল ছাড়াও, নেইমার তার ব্যবসায়িক উদ্যোগ, স্পনসরশিপ চুক্তি এবং অন্যান্য উদ্যোগের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করেছেন। ফোর্বসের তথ্যানুসারে, ২০১৯ সালে নেইমারের নেট ওয়ার্থ ছিল উল্লেখযোগ্য, যা তার ক্যারিয়ারের জন্য একটি নতুন মাইলফলক হিসেবে দাঁড়িয়েছিল।
Neymar: এই প্রবন্ধে আমরা ফোর্বস অনুযায়ী নেইমারের ২০১৯ সালের নেট ওয়ার্থ বিশ্লেষণ করব, তার আয়ের উৎস, ব্যয়, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
Neymar: নেইমারের ক্যারিয়ার: একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

Neymar: নেইমার তার ক্যারিয়ার শুরু করেন ব্রাজিলের সান্তোস ক্লাবে। ছোটবেলা থেকেই তার ফুটবল দক্ষতা ছিল চোখে পড়ার মতো, এবং মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি সান্তোস ক্লাবের হয়ে পেশাদার ফুটবল জীবন শুরু করেন। তার পরে ২০১৩ সালে তিনি স্পেনের বার্সেলোনায় যোগ দেন এবং সেখানে দ্রুত খ্যাতি অর্জন করেন। ২০১৭ সালে, নেইমার প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) ক্লাবের সাথে একটি বিশ্ব রেকর্ড ট্রান্সফার ফি (২২২ মিলিয়ন ইউরো) দিয়ে যোগ দেন।
তার ফুটবল ক্যারিয়ারের বড় অর্জনগুলো অন্তর্ভুক্ত:

অর্জন | বিস্তারিত |
---|---|
ক্লাব ক্যারিয়ার | ১ বার চ্যাম্পিয়নস লিগ, ২ বার লা লিগা চ্যাম্পিয়ন, ৩ বার কোপা দেল রে |
জাতীয় দলের সফলতা | কোপা আমেরিকা ২০১৩, অলিম্পিক গোল্ড মেডেল ২০১৬ |
ব্যক্তিগত পুরস্কার | ফিফা পুস্কাস পুরস্কার, সাউথ আমেরিকান ফুটবলারের পুরস্কার ২০১২ ও ২০১৩ |
নেইমারের ২০১৯ সালের নেট ওয়ার্থ

Neymar: ফোর্বসের মতে, ২০১৯ সালে নেইমারের মোট আয় ছিল প্রায় ৯৫ মিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে তার ফুটবল বেতন, স্পনসরশিপ চুক্তি, এবং ব্যবসায়িক আয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই আয়ের পরিমাণ তাকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সবচেয়ে বেশি আয় করা ফুটবলারদের মধ্যে স্থান দেয়। এছাড়া, ২০১৯ সালে নেইমারের নেট ওয়ার্থ ছিল আনুমানিক ২০০ মিলিয়ন ডলার। ফোর্বসের প্রতিবেদনে এই বিশাল পরিমাণ অর্থের উৎস ছিল মূলত তিনটি প্রধান এলাকায়: পিএসজি ক্লাব থেকে বেতন, ব্র্যান্ড চুক্তি, এবং ব্যবসায়িক উদ্যোগ।
নেইমারের আয়ের প্রধান উৎস
১. পিএসজির বেতন
Neymar: নেইমারের সবচেয়ে বড় আয়ের উৎস তার ক্লাব পিএসজির বেতন। ২০১৭ সালে পিএসজি-তে যোগ দেওয়ার পর, নেইমারের বেতন আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে। তার বার্ষিক বেতন ছিল প্রায় ৭০ মিলিয়ন ডলার। এই আয় তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতনপ্রাপ্ত ফুটবলারদের মধ্যে স্থান দেয়।
২. স্পনসরশিপ চুক্তি

Neymar: নেইমার ফোর্বসের তালিকায় অন্য ফুটবলারদের মতোই একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে রাখেন তার স্পনসরশিপ চুক্তির মাধ্যমে। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নাইকি, পুমা, রেড বুল, ক্লিয়ার শ্যাম্পু এবং ইয়াহু। এই চুক্তি থেকে তার বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ২৫ মিলিয়ন ডলার।
৩. বিজনেস ইনভেস্টমেন্ট
Neymar: ফুটবল ক্যারিয়ারের বাইরে নেইমার বেশ কিছু ব্যবসায়িক উদ্যোগেও জড়িত। তার বিনিয়োগের মধ্যে রয়েছে ই-স্পোর্টস, রিয়েল এস্টেট এবং বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার। এই ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলো তাকে বছরে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার আয় এনে দেয়।
নেইমারের বিলাসবহুল জীবনযাপন

নেইমার তার আয়ের একটি বড় অংশ বিলাসী জীবনযাপনে ব্যয় করেন। তার জীবনযাত্রার মধ্যে রয়েছে প্রাসাদসম বাড়ি, অত্যাধুনিক গাড়ির সংগ্রহ এবং ফ্যাশন নিয়ে তার অনুরাগ। নিচে তার জীবনযাত্রার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হল:
১. বাড়ি ও সম্পত্তি
নেইমার তার সম্পত্তি নিয়ে বেশ সচেতন। তিনি প্যারিসে একটি বিলাসবহুল পেন্টহাউসে থাকেন, যা পিএসজির স্টেডিয়ামের কাছে অবস্থিত। এছাড়া, তিনি ব্রাজিলে রিও ডি জানেইরোতে একটি বিশাল প্রাসাদে বাস করেন, যা তার আর্থিক সাফল্যের প্রতীক।
সম্পত্তির নাম | স্থান | বিস্তারিত |
---|---|---|
প্যারিস পেন্টহাউস | প্যারিস, ফ্রান্স | পিএসজির স্টেডিয়ামের কাছে, বিলাসবহুল ডিজাইন |
রিও ডি জানেইরো প্রাসাদ | রিও ডি জানেইরো, ব্রাজিল | আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, সুইমিং পুল ও জিম |
২. গাড়ি সংগ্রহ

নেইমারের গ্যারেজে বিলাসবহুল গাড়ির একটি বিশাল সংগ্রহ রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের গাড়ি রয়েছে। তার গাড়ির সংগ্রহে অন্তর্ভুক্ত:
- ফেরারি ৪৫৮ ইতালিয়া – ৫৬২ হর্সপাওয়ার ইঞ্জিন সহ একটি স্পোর্টস গাড়ি।
- পোরশে ৯১১ টার্বো এস – একটি উচ্চ মানের বিলাসবহুল গাড়ি।
- ল্যাম্বোরগিনি অ্যাভেন্টাডর – ৬.৫ লিটার ভি১২ ইঞ্জিন সহ একটি অত্যাধুনিক গাড়ি।
৩. ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল
নেইমার তার ফ্যাশন সেন্স নিয়ে আলোচিত। তার পোশাকের পছন্দ প্রায়ই বিশ্বজুড়ে নজর কেড়ে থাকে। তিনি বড় বড় ফ্যাশন ডিজাইনারদের পোশাক পরিধান করেন, যেমন ভার্সাচি, লুই ভিটন, বলমেন ইত্যাদি। তার ফ্যাশন শো এবং পপুলার মিডিয়ায় উপস্থিতি তাকে আরও জনপ্রিয় করেছে।
নেইমারের দান ও সমাজসেবা

নেইমার তার বিপুল পরিমাণ অর্থকে শুধুমাত্র বিলাসী জীবনযাপনে ব্যয় করেন না, বরং সমাজসেবা ও দানে তিনি একটি বড় অংশ প্রদান করেন। ২০১৪ সালে, তিনি নেইমার জুনিয়র ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন, যা ব্রাজিলের দরিদ্র অঞ্চলগুলির শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ক্রীড়া সুবিধা প্রদান করে। এছাড়া, তিনি বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে বড় অঙ্কের দানও করেন।
নেইমারের ভবিষ্যত
নেইমারের ক্যারিয়ার এখনও অনেকটা সময় বাকি। ২০১৯ সালে তার নেট ওয়ার্থ ছিল ২০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, তবে তার ফুটবল ক্যারিয়ার এবং ব্র্যান্ড চুক্তি ধরে রাখলে, ভবিষ্যতে তার নেট ওয়ার্থ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। নেইমার বর্তমানে পিএসজির হয়ে খেলছেন এবং ভবিষ্যতে আরও বড় ব্যবসায়িক উদ্যোগে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

ফোর্বস অনুযায়ী ২০১৯ সালে নেইমারের নেট ওয়ার্থ ছিল একটি বিশাল পরিমাণ, যা তার পরিশ্রম, দক্ষতা এবং বুদ্ধিমত্তার ফলস্বরূপ। পিএসজিতে তার বিশাল বেতন, স্পনসরশিপ চুক্তি এবং বিজনেস ইনভেস্টমেন্ট তাকে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ আয়কারী ফুটবলার বানিয়েছে। তবে তার জীবনযাত্রা, দান এবং সমাজসেবার কর্মকাণ্ডও তাকে অন্যদের কাছে প্রশংসিত করেছে। নেইমারের ভবিষ্যত ফুটবল এবং ব্যবসায়িক দিক থেকে আরও উজ্জ্বল বলে মনে হচ্ছে, এবং তার নেট ওয়ার্থ একে একে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।